চলুন আজ জেনে নিই হাওড়া জেলার রামরাজাতলার রাম ঠাকুর, শমীচন্ডীও নবনারীর কথা ও তাদের বিসর্জনের ইতিহাস৷
শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার দীর্ঘতম মেলার শেষ দিন৷ একদম ঠিক ধরেছেন, আমি হাওড়ার রামরাজাতলায় রামঠাকুরকে কেন্দ্র করে চারমাস চলা মেলার কথা বলছি৷ ইতিহাস বলছে, শ্রীরামকৃষ্ণের শিষ্য রামকৃষ্ণপুরের নবগোপাল ঘোষের বাড়ি থেকে ১৯০৯-এ মা সারদা রামরাজাতলায় আসেন রামঠাকুরের দর্শন করতে। মন্দিরের পাশের পুকুরে পা ধুয়ে তিনি রামমন্দিরে প্রবেশ করেন ও শ্রীরামচন্দ্রের মূর্তি দর্শন করেন।রামমূর্তি দর্শনে এসেছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, শ্রী বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামীর মতো বিখ্যাত ব্যক্তিরা। তাঁদের মতোই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু বিখ্যাত মানুষও এসেছেন রামের দর্শনে।
শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার রামমূর্তিকে যখন বিসর্জনে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন বিশাল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ২৮ ফুট উচ্চতার এই মূর্তি নিয়ে যাওয়ার জন্য এলাকার রাস্তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতেই হয়।
এমনও জানা যায়, এই বিদ্যুৎ বিছিন্ন করা নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে লড়েছিলেন তৎকালীন হাওড়ার ম্যাজিস্ট্রেট সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ট্রাম লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন করে রামের মূর্তি বিসর্জনের অনুমতি দেওয়ায়, তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়েছিল। তবে তাতেও রামের শোভাযাত্রা আটকানো যায়নি।
রামরাজাতলার রাম, বাকসাড়ার নবনারী ও ইছাপুরের শমীচণ্ডী। এই তিন পুজো ও মেলা কেন্দ্র করে এলাকায় চলে চার মাসব্যাপী সাড়ম্বর উৎসব।শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার এই মেলার শেষ হয় আর মূর্তির বিসর্জন হয়৷ এবার জেনে নিই এই পুজোগুলির ইতিহাস৷
শ্রাবণ মাসের শেষ রবিবার প্রতিমাগুলি বিসর্জন দেওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে৷ প্রতিমাগুলি এতই বড় হয় যে এগুলিকে লরিতে করে নিয়ে যাওয়া যায় না। প্রতিমাগুলি দড়ি টানা ট্রলির উপরই তৈরি করা হয় ও বিসর্জনের দিন রথের মত টেনে টেনে মন্দির থেকে গঙ্গার ঘাট পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। ইছাপুরের শমীচণ্ডী এবং বাকসাড়ার পুরনো ও নতুন নবনারীর পুজোও বহু প্রাচীন।
ইছাপুরের শমীচণ্ডী
জনশ্রুতি, আগে ইছাপুর ও সংলগ্ন এলাকায় পান চাষ হত। পানবরজে শমীপোকার আক্রমণ ঠেকাতেই তখন এলাকার মানুষরা এই পুজো শুরু করেন। বাসন্তী শুক্লা সপ্তমী তিথি থেকে পুজো শুরু হয়ে চার মাস ধরে পুজো চলে। প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতার শমীচণ্ডী মাতার মূর্তির পাশে শিব ও ইন্দ্র-সহ নানান দেব-দেবীর মূর্তি থাকে।
বাকসাড়ার পুরানো ও নতুন নবনারী
বাকসাড়ার নবনারীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা নিয়েও আছে জনশ্রুতি। শোনা যায় বৃন্দাবনের এক সাধু বাকসাড়ার সাতঘরায় আশ্রম করেন। ১২৯২ বঙ্গাব্দে বাকসাড়ায় সাতঘরায় নবনারী কুঞ্জমন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। মন্দির কমিটির সভাপতি অমরনাথ মুখোপাধ্যায় এর কথায়, “আগে গোলপাতার আটচালায় নবনারী পুজো হত। পরে পাকা মন্দির নির্মিত হয়। মন্দিরে চার মাস ধরে নিত্য পুজো ও ভোগ হয়। আগে যাত্রা, গান, মেলা বসত। এখন মেলাই শুধু বসে।”
Rama Mandir (Rama Temple)
A fair is held during the four-month-long puja. This is popular, particularly during the bisarjan (immersion ceremony), which is the last Sunday's last journey in Shraavana.
History
Ayodhyaram Choudhury, the zamindar started the Rama puja first time in this area. According to him, he got some divine instructions to worship Lord Rama. After that, he started a huge Barowari Puja of Lord Rama.
That Puja got massive popularity in time, and the locality was named after it Ramrajatala. But during that time, Saraswati Puja was very famous in that area and the villagers used to enjoy the same a lot from the previous 300 years. So some villagers who were fond of the Saraswati Puja opposed the Ram Puja.
After numerous discussions, the two groups concluded that Ram Puja would be done and the Goddess of Wisdom Saraswati would be placed on the top of Lord Ram & Sita. From that day the customary started to cut the bamboo from the bamboo groove of Sasthitala and perform the very first Puja of those bamboos at Choudhury Para Shib Mandir on the day of Saraswati Puja.
During the initial days of the Puja, the fair was firstly held for three days. After that, it continued for a fortnight and then up to a month. Now Ram Puja starts on Ramnavami in Chaitra-Baisakh month and continues up to the last Sunday of Shravan month. It is the longest-running fair in Bengali.
Follow us on our social media platforms
Post a Comment